লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
ঈদের দিন ছিল প্রচন্ড রোদ আর তাপদাহ।ঈদের দ্বিতীয় দিন শিতল আবহাওয়া পবিত্র ঈদ-উল ফিতরে আনন্দ উপভোগ করতে দেশের বৃহত্তর তিস্তা ব্যারাজ,তিন বিঘা করিডর ও মহিপুর শেখ হাসিনা সেতুতে লাখো মানুষের ঢল নামে। ব্যারাজে মানুষের সমাগমে তিল ধারনের ঠাঁই নেই।
এদিকে তিস্তার ভাটিতে নৌকা আর স্পিডবোটে এজন্য সমুদ্রের তীরের সৈকতের ছোঁয়া। ব্যারাজের দুই পাড়ে বসছে হরেক রকমের দোকান পাট।
প্রতিবছর ঈদ ও নানা উৎসবের দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ এলাকা। এবারের ঈদ- উল ফিতরের ছুটিতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
রোববার (২৩ এপ্রিল) ঈদের দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকে ব্যারাজ এলাকায় দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষনীয়। বিভিন্ন স্থান থেকে কেউ আসছে মটর বাইকে কেউ বা অটোরিকশায় আবার কেউ বা মাইক্রো বাসে চেপে। তিস্তা ব্যারাজ,তিনবিঘা করিডোর ও মহিপুর শেখ হাসিনা সেতুতে ঈদের ছুটির তিনদিন চলবে আনন্দ-উৎসব।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রচণ্ড তাপদাহের পরেও স্বস্তি খুঁজতে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ছুটে আসতে তিস্তা ব্যারাজে। ঈদ উপলক্ষে তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে একটু পানিতে স্পিডবোট ও লাল-নীল কাপড় লাগানো বেশ কয়েকটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যাত্রীদের বিনোদন দিতে মাত্র ৫০ টাকায় দ্রুতবেগে এপাশ থেকে ওপাশ ছুটে চলছে।
তিস্তা ব্যারাজের ওপর বিভিন্ন বয়সী ছেলে ও মেয়েদের মোবাইল ফোনে সেলফি তুলে আনন্দ উল্লাস করতে দেখা যায়।
এদিকে তিস্তা নদী ও পয়েন্টের দুই পাড়ে বসে বিভিন্ন ধরনের বাহারি দোকানপাট। এদিকে ঈদ উপলক্ষে লালমনিরহাট ও রংপুর জেলার মানুষের মেলবন্ধনে মহিপুর-কাকিনা পয়েন্টে নবনির্মিত ‘শেখ হাসিনা তিস্তা সড়ক সেতুর’ টানেই হাজার হাজার মানুষের ভিড় সেখানে।
গতবারের চেয়েও এবার দর্শনার্থীদের পদচারণায় যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা।
ঈদের ছুটিতে থাকা সব বয়সী মানুষের ভিড় জমলেও এখানে আসা সিংহভাগই তরুণ-তরুণী। শিশুদের সঙ্গে অভিভাবকরাও কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে যাচ্ছে আনন্দের রাজ্যে।
অপর দিকে ঈদের প্রথম দিন থেকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার তিনবিঘা করিডোর এলাকায় দেখতে সব বয়সের মানুষ ভিড় করছেন। তিন বিঘা করিডর এলাকায় নিরাপত্তা দিতে বিজিবি ও ভারতীয় বিএসএফ পাহারা জোরদার করেছেন।
ঈদের আনন্দে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, অত্র এলাকায় কোনো বিনোদনকেন্দ্র না থাকায় প্রতিবছর ঈদ ও নানান উৎসবে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় ছুটে আসি। আনন্দ উপভোগ করে ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরে।
নীলফামারী-জলঢাকা থেকে ঘুরতে আসা শিক্ষার্থী শাহানা বলেন,ঈদের আনন্দে তিস্তা ব্যারাজ ঘুরতে এসে অনেক ভালো লাগছে। পাশাপাশি এত মানুষ দেখে আরও আনন্দিত হয়ে পড়ছি।
হাতীবান্ধার বড়খাতা থেকে আসা শিক্ষার্থী টুম্পা বলেন,ঈদের আনন্দে তিস্তা ব্যারাজে এসে আনন্দিত। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রচণ্ড রোদ তাই বিকেলে পরিবার নিয়ে এসে স্পিরিট বোর্ডে উঠে অনেক ভালো লাগছে। এত মানুষ আসবে তা ভাবতেই পারেনি।
জলঢাকার চাপানী থেকে আসা দর্শনার্থী অহিদুজ্জামান বলেন,পবিত্র মাহে রমজান শেষে ঈদের আনন্দে তিস্তা ব্যারাজের এসে স্বচ্ছন্দ বোধ করছি। এই জায়গাটা যদি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয় তাহলে আরো ভাল হবে। কারন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এই ব্যারাজে মানুষ ঘুরতে আসে।
এবিষয়ে হাতীবান্ধা থানার দোয়ানী পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত এস,আই দিপ্ত কুমার বলেন, অত্র এলাকায় কোনো বিনোদনকেন্দ্র না থাকায় প্রতিবছর পরিবার-পরিজন নিয়ে তিস্তা ব্যারাজে আনন্দ উপভোগ করতে আসছেন। তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় আনসার ও পুলিশ জনসাধারণকে
সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিচ্ছেন। তিস্তা ব্যারাজের একমুখী রাস্তা ও প্রচুর পরিমাণে জনসমাগম ঘটায় একটু যানজট সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক যানজটমুক্ত রাখছেন পুলিশ।